আসসালামু আলাইকুম, আশা করছি আল্লাহর রহমতে সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকে এয়ারটিকলের মাধ্যমে আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি পবিত্র জমজম কূপের ইতিহাস সম্পর্কে। জমজম কূপ কিভাবে সৃষ্টি হয় সে সম্পর্কে। তাই যারা জমজম কূপের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে চান। তারা আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত করুন।
জমজম কুপের ইতিহাস যেভাবে সৃষ্টি হয় জমজম কূপ
কাবা শরীফ থেকে মাত্র ২১ মিটার দূরে ৩১ মিটার গভীরে এই পানির অবস্থান। পানির লেভেল কম থাকলে ১১০০ লিটার পানি প্রতি সেকেন্ডে উত্তোলন করা যায়। এবং পানি লেভেল যখন পূর্ণ আকার ধারণ করে তখন ১৮৫০ লিটার পানি প্রতি সেকেন্ডে উত্তোলন করার রেকর্ড রয়েছে। দুটি বড় আকারের অটোমেটিক পাম্পের মাধ্যমে ২৪ ঘন্টাই পানি উত্তোলন করা হয়ে থাকে। তবে কিভাবে সৃষ্টি হল এই পবিত্র জমজম কূপ? এই পবিত্র জমজম কূপ এর পেছনে লুকিয়ে রয়েছে বিশেষ কিছু ইতিহাস। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক এই পবিত্র জমজম কূপের সৃষ্টির ইতিহাস সম্পর্কে।
জমজম কূপের পানি পৃথিবীর সমস্ত পানির থেকে উত্তম এবং পবিত্র। কাবা শরীফের ইতিহাসে জমজম কূপ একে অন্যের সাথে বিশেষভাবে জড়িত। ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা পবিত্র হজ কিংবা পবিত্র ওমরা পালনের সময় এই কূপ থেকেই পানি সংগ্রহ করে থাকে। ইসলাম ধর্মে জমজম কূপের পবিত্র পানির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। হযরত ইব্রাহিম (আ) যখন শিশু ইসমাইল (আ) সহ বিবি হাজেরা (আ) কে মক্কা নির্বাসনে পাঠান। তখন থেকেই জমজম কূপের আবির্ভাব হয়। হযরত (আ) যখন সিরিয়া থেকে মক্কায় পৌঁছান। তখন বিবি হাজেরা (আ) এবং দুধের শিশু হযরত ইসমাইল (আ) কে মক্কার মরুভূমিতে রেখে সিরিয়া প্রত্যাবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন।
এ অবস্থায় তাদের জন্য রেখে গিয়েছিলেন সামান্য পানি ও একটা থলের মধ্যে কিছু সংখ্যক খেজুর। হযরত হাজেরা (আ) কয়েকদিন পর্যন্ত এই পানি ও খেজুর খেয়ে দিন কাটাতে থাকেন। এবং নিজের কলিজার টুকরা হযরত ইসমাইল (আ) কে দুধ পান করাতে থাকেন। কিন্তু একটা সময় আসে যখন এই পর্যাপ্ত পানি ও খেজুর ফুরিয়ে যেতে লাগলো। এই অবস্থায় হযরত হাজেরা (আ) চরম অসহায়ত্বের অনুভব করতে থাকেন। তার শিশু সন্তানটিও ক্ষুধার তাড়নায় ছটফট করতে লাগলো। এমন অবস্থায় হযরত হাজেরা (আ) পানির খোঁজে সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের দিকে দ্রুত বেগে ছুটতে লাগলেন।
পরপর সাতবার ছুটার পরেও কোন পানি না পেয়ে মহান আল্লাহর কাছে সামান্য পানি প্রাপ্তি করেন। আল্লাহ মা হাজেরার দোয়া কবুল করেন। এরপর মা হাজেরা যখন তার পুত্রের কাছে ফিরে যান। তখন তিনি দেখতে পান আল্লাহর কুদরতে তার দুই পায়ের নিচে একটা পানির ফোয়ারা জেগে উঠেছে। হযরত বিবি হাজেরা তখন অত্যন্ত আনন্দিত হলেন। এবং চারিদিকে পার বেঁধে পানি সংগ্রহ করার চেষ্টা করতে লাগলেন। এবং পানিকে থামার নির্দেশ দিয়ে উচ্চস্বরে বলতে লাগলেন “জমজম” অর্থাৎ থেমে যাও। হযরত হাজেরা (আ) এর উচ্চারিত এই শব্দেই পৃথিবীর সবচেয়ে পবিত্র এই কুপটির নামকরণ করা হয় জমজম কূপ।
আরও পড়ুনঃ দেখুন আপনার ব্রেন কতটা শক্তিশালী। আপনি চাইলে কি করতে পারেন?